সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০১৭

পাঁচ মিনিটে বানিয়ে নিন অসাধারণ এই ফেস লোগোটি... এবার আপনি পারবেনই...

পাঁচ মিনিটে বানিয়ে নিন অসাধারণ এই ফেস লোগোটি... এবার আপনি পারবেনই...

ফেস গ্যালাক্সি লোগোর সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। অনেক বড় বড় ইউটিউবার এই ফেস গ্যালাক্সি লোগো ব্যবহার করে থাকেন। ফেস গ্যালাক্সি লোগোতে কোন ব্যাক্তির চেহারার উপরে গ্যালাক্সি এর ইফেক্ট যোগ করা হয়।

এই ধরণের লোগো এখন খুব জনপ্রিয়। অনেকেই এখন নিজের প্রয়োজনে এই ধরণের লোগো তৈরী করার চেষ্টা করছেন। ইউটিউব এবং ইন্টারনেট ঘেটে অনেক ভিডিও দেখেছেন। কিন্তু ফটোশপ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকায় এবং টিউটোরিয়ালগুলো সহজবোধ্য না হওয়ায় তারা লোগোটি তৈরী করতে পারেননি।

আজকে আমি খুবই সহজে এই লোগো বানানো দেখাবো। ফটোশপ সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকলেও যে কেউ এই লোগোটি তৈরী করতে পারবেন।

কিন্তু তার আগে চলুন লোগো সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

লোগো ? হ্যাঁ লোগো

যদি প্রশ্ন করা হয় লোগো কি ?

এটা আবার কেমন প্রশ্ন হল!! লোগো আবার কি হবে!! লোগো তো লোগোই সব প্রতিষ্ঠানেরই তো লোগো আছে। গুগলের লোগো আছে, ইউটিউবের লোগো আছে, ফেসবুকের লোগো আছে আবার টেকটিউনসেরও লোগো আছে হ্যাঁ একদম ঠিক। সব সংঘ বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিরই লোগো আছে।
এই লোগোটা সেই কোম্পানির বা প্রতিষ্ঠানের পরিচায়ক। লোগো দেখেই আমরা বুঝতে পারি এতা ওমুক কোম্পানির, এটা অমুক গ্রুপের সত্যি বলতে কি লোগ কোন প্রতিষ্ঠানের নামের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং ক্ষেত্রবিশেষে নামের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আসলে কি এই লোগো ?

লোগো হল এক ধরণের গ্রাফিক্যাল সিম্বল সোজা বাংলায় চিত্রায়িত প্রতীক। প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র লোগো থাকে। অনেক ক্ষেত্রে নামকেই লোগো হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায় কিন্তু সেক্ষেত্রেও নামটা গ্রাফিক্যাল সিম্বলেই লোগো বলে স্বীকৃত হয়।

 কোথায় লোগো দরকার?

প্রশ্নটা হওয়া উচিৎ, লোগো দরকার নয় কোথায়? লোগো এমন এক অপরিহার্য উপাদান যে এটা ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কল্পনা করাটাই বোকামি। প্রতিষ্ঠান, সে যে ধরনেরই হোক লোগো থাকাটা ফরজ কাজের মধ্যে পড়ে। লোগোহীন প্রতিষ্ঠান নামছাড়া মানুষের মত। চিনলেও কেউ চিনবে না।
আপনার যদি কোন ছোটখাটো বিজনেস(ব্যবসা) থেকে থাকে বা কোন একটা সামাজিক বা যে কোন ধরণের দল বা সংঘ থেকে থাকে তবে আপনার ব্যবসা বা সংঘের প্রচারণার জন্য অবশ্যই একতা লোগো থাকা আবশ্যক এমনকি আপনার যদি কোন ফেসবুক পেজ থেকে থাকে বা থেকে থাকে কোন জনপ্রিয় গ্রুপ অথবা কোন ইউটিউব চ্যানেল কিংবা কোন ওয়েবসাইট তবে আপনার অবশ্যই একটা লোগো থাকা খুবই জরুরি।

কিন্তু কিভাবে?

লোগো নিয়ে প্রথম সমস্যা হল আপনি নিজে বানাতে পারেন না। তখন আপনি কাউকে দিয়ে লোগো বানিয়ে নিতে চান। কিন্তু সেক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক টাকা লাগে। আবার টাকা দিয়ে বানিয়ে নেওয়ার পর আপনার লোগটা পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই, আবার নতুন করে টাকা খরচ।

কি দরকার এত্তো এত্তো ঝামেলার?

এত ঝামেলায় না গিয়ে আপনি নিজেই যদি বানিয়ে ফেলতে পারেন মনোমুগ্ধকর দৃষ্টিনন্দন একটি লোগো তাহলে কেমন হয়?অবশ্যই অসাধারণ। তো শুরু করে ফেলুন। 

নিজেই বানিয়ে ফেলতে যদি চান অসাধারণ এই লোগোটি তাহলে ভিডিও টিউটোরিয়ালটি দেখে নিন।


ইউটিউবিং এ আমি নতুন। কয়েকটি টিউটোরিয়াল দিয়েছি। সামনে আরো অনেক ভিডিও দেব। লোগো টিউটোরিয়াল নিয়েই আরো ৩টি ভিডিও দেওয়ার জন্য কাজ করছি, অবশ্যই প্রত্যেকটি টিউটরিয়ালে ভিন্ন ভিন্ন লোগো তৈরী করা দেখাবো। আশা করি সবাই আপনারা আমার পাশে থাকবেন।

                                              আর অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করবেন।


বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭

নিজে নিজেই বানিয়ে নিন অসাধারণ লোগো (ফেসবুক গ্রুপ/পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, ছোট ব্যবসা, অনলাইন ব্যবসার জন্য)

নিজে নিজেই বানিয়ে নিন অসাধারণ লোগো (ফেসবুক গ্রুপ/পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, ছোট ব্যবসা, অনলাইন ব্যবসার জন্য)


লোগো... হ্যাঁ লোগো... 

যদি প্রশ্ন করা হয় লোগো কি????

এটা আবার কেমন প্রশ্ন হল!!😕😕 লোগো আবার কি হবে!!😶😶 লোগো তো লোগোই...
 সব প্রতিষ্ঠানেরই তো লোগো আছে। গুগলের লোগো আছে, ইউটিউবের লোগো আছে, ফেসবুকের লোগো আছে আবার টেকটিউনসেরও লোগো আছে...

হ্যাঁ একদম ঠিক। সব সংঘ বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিরই লোগো আছে। এই লোগোটা সেই কোম্পানির বা প্রতিষ্ঠানের পরিচায়ক। লোগো দেখেই আমরা বুঝতে পারি এতা ওমুক কোম্পানির, এটা অমুক গ্রুপের... সত্যি বলতে কি লোগ কোন প্রতিষ্ঠানের নামের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং ক্ষেত্রবিশেষে নামের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 


আসলে কি এই লোগো?? 


লোগো হল এক ধরণের গ্রাফিক্যাল সিম্বল সোজা বাংলায় চিত্রায়িত প্রতীক। প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র লোগো থাকে। অনেক ক্ষেত্রে নামকেই লোগো হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায় কিন্তু সেক্ষেত্রেও নামটা গ্রাফিক্যাল সিম্বলেই লোগো বলে স্বীকৃত হয়। 



কোথায় লোগো দরকার?



প্রশ্নটা হওয়া উচিৎ, লোগো দরকার নয় কোথায়? লোগো এমন এক অপরিহার্য উপাদান যে এটা ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কল্পনা করাটাই বোকামি। 
প্রতিষ্ঠান, সে যে ধরনেরই হোক লোগো থাকাটা ফরজ কাজের মধ্যে পড়ে। লোগোহীন প্রতিষ্ঠান নামছাড়া মানুষের মত। চিনলেও কেউ চিনবে না।

আপনার যদি কোন ছোটখাটো বিজনেস(ব্যবসা) থেকে থাকে বা কোন একটা সামাজিক বা যে কোন ধরণের দল বা সংঘ থেকে থাকে তবে আপনার ব্যবসা বা সংঘের প্রচারণার জন্য অবশ্যই একতা লোগো থাকা আবশ্যক... এমনকি আপনার যদি কোন ফেসবুক পেজ থেকে থাকে বা থেকে থাকে কোন জনপ্রিয় গ্রুপ অথবা কোন ইউটিউব চ্যানেল কিংবা কোন ওয়েবসাইট তবে আপনার অবশ্যই একটা লোগো থাকা খুবই জরুরি।

কিন্তু কিভাবে? 

লোগো নিয়ে প্রথম সমস্যা হল আপনি নিজে বানাতে পারেন না। তখন আপনি কাউকে দিয়ে লোগো বানিয়ে নিতে চান। কিন্তু সেক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক টাকা লাগে। আবার টাকা দিয়ে বানিয়ে নেওয়ার পর আপনার লোগটা পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই, আবার নতুন করে টাকা খরচ। 

কি দরকার এত্ত এত্ত ঝামেলার?



এত ঝামেলায় না গিয়ে আপনি নিজেই যদি বানিয়ে ফেলতে পারেন মনোমুগ্ধকর দৃষ্টিনন্দন একটি লোগো তাহলে কেমন হয়? 
অবশ্যই অসাধারণ। তো শুরু করে ফেলুন। নিজেই বানিয়ে ফেলতে যদি চান অসাধারণ এই লোগোটি... 

তাহলে ভিডিও টিউটোরিয়ালটি দেখে নিন আর নিজেই তৈরি করুন অসাধারন এই লোগোটি... 


টিউটোরিয়ালটি খুবই সহজ ভাবে বর্নণা করে করেছি... তাই বুঝতে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না... তবুও যদি কার কোন অসুবিধা হয় তবে কমেন্টে জানাবেন আমি সাহায্য করার চেষ্টা করব।

ইউটিউবিং এ আমি নতুন। কয়েকটি টিউটোরিয়াল দিয়েছি। সামনে আরো অনেক ভিডিও দেব। লোগো টিউটোরিয়াল নিয়েই আরো ৩টি ভিডিও দেওয়ার জন্য কাজ করছি, অবশ্যই প্রত্যেকটি টিউটরিয়ালে ভিন্ন ভিন্ন লোগো তৈরী করা দেখাবো। আশা করি ইউটিউবিং এ ও আপনারা আমার পাশে থাকবেন। দেখে আসতে পারেন আমার চ্যানেল।


                                                          ধন্যবাদ...


রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭

ফ্রীলান্সিং বা আউটসোর্সিং, কি? কেমন করে? কেন? কিভাবে? ( ফ্রীলান্সিং এর আদ্যোপান্ত, মেগা পোস্ট)

ফ্রীলান্সিং বা আউটসোর্সিং, কি? কেমন করে? কেন? কিভাবে? ( ফ্রীলান্সিং এর আদ্যোপান্ত, মেগা পোস্ট)


ফ্রীলান্সিং(মুক্তপেশা) বা আউটসোর্সিং(ইহার কোন বাংলা প্রতিশব্দ পাওয়া যায় নায়, আশা করি খুব তাড়াতাড়িই পাবো... বাংলা একাডেমী আছে না😜😜) শব্দদুটির যে কোন একটি শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ সামনে, পাশে কফির মগ নিয়ে অল্পবয়সী কোন তরুণ বা তরুণী ইন্টারনেটে কাজ করে যাচ্ছে মনের সুখে...😜😜😜...(আমেরিকাতেও মনে হয় কেউ এমন স্বপ্নের মত ফ্রিলান্সিং করে নাহ, আর বাংলাদেশে...😔😔)...

ফ্রীলান্সিং বা আউটসোর্সিং বলতে সাধারণত আমরা বুঝি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করে টাকা আয় করা, সাধারণ অর্থে ফ্রীলান্সিং এর সঙ্গা এটাই।


(Freelancing)ফ্রীলান্সিং কি?



Freelancing(ফ্রীলান্সিং) একটি ইংরেজী শব্দ। Free এবং Lancing দুটি আলাদা শব্দ থেকে Freelancing শব্দটির উৎপত্তি। Freelancing শব্দটির প্রথম অংশ Free শব্দটি এসেছে জার্মান ভাষা থেকে যার অর্থ To Love(ভালবাসতে/ভালবাসে), কে না ভালবাসে নিজের ইচ্ছামত সময়ে পছন্দের কাজ করে জীবিকা উপার্জন করতে??? আর দ্বিতীয় অংশ Lancing এসেছে ফরাসি ভাষা থেকে যার অর্থ Hurl(সজোরে নিক্ষেপ করা)। হ্যাঁ আপনি ঠিকই পড়েছেন।
তাহলে ফ্রীলান্সিং এর অর্থ কি হল?? 😕😕😕😕
শাব্দিক অর্থ বের করতে গেলে আপনার মাথা নষ্ট না হলে আমাকে বলবেন, আপনার মত লিজেন্ডকে একবার না দেখে মরতে চাই না আমি।

ফ্রীলান্সিং হল মূলত, জীবিকা নির্বাহের জন্য কারো অধীনে না থেকে নিজের ইচ্ছা ও পছন্দমত কাজ করা।


এখনকার যুগে ফ্রিলান্সিং এর ধারণা প্রধানত ইন্টারনেট থেকে মুক্ত ভাবে আয়ের উপরেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু যে কোন ধরণের স্বাধীন পেশাই ফ্রীলান্সিং এর আওতাভুক্ত। এমনকি কৃষিকাজ, লেখালেখি, স্বাধীন যে কোন ব্যবসা, মুদি দোকানদারি(নিজে মালিক হলে), ড্রাইভিং(গাড়ি নিজের হলে), খামার ও পশুপালন এই বিষয়গুলোও ফ্রীলান্সিং এর অন্তর্ভুক্ত।

যারা Freelancing করে তাদের বলা হয় Freelancer(ফ্রীলান্সার), সোজা বাংলায় মুক্তপেশাজীবি।


                    
                                      ফ্রিলান্সারদের সাধারণত ৪টি শ্রেনীতে বিভক্ত করা হয়।

১) Side-Project Freelancer(পার্শ্বিক মুক্তপেশাজীবি): এরা মূলত জীবিকার জন্য দৈনিক কোন একটি পেশার সাথে সম্পৃক্ত। তাদের দৈনিক পেশার কর্মকান্ড সম্পাদন করার পর তারা ফ্রীলান্সিং করে। অর্থাৎ এরা সম্পূর্ণ মুক্তপেশাজীবি বা ফ্রীলান্সার না, আংশিক মুক্তপেশাজীবি।

২) Full Time Freelancer(সার্বক্ষণিক মুক্তপেশাজীবি): জীবিকা অর্জনের জন্য সম্পূর্ণভাবে মুক্তপেশার উপর নির্ভরশীল। এরা পছন্দানুযায়ী একের পর এক ফ্রীলান্সিং জব করতে থাকে।

৩) Single Contract Freelancer(কন্ট্রাক ভিত্তিক ফ্রীলান্সার): কন্ট্রাক নেওয়ার মাধ্যমে ফ্রিলান্সিং করে। ক্লায়েন্টের সাথে কন্ট্রাক করে কোন একটি প্রজেক্ট নেয় এবং একটি প্রজেক্টই করে। সার্বক্ষণিক ফ্রিলান্সারদের মত একের পর এক জব করে না।

৪) Freelancer Business Owner(ফ্রীলান্সিং ব্যবসার মালিক): ব্যবসার বৃদ্ধির জন্য যারা ফ্রীলান্সারদের কাছে নিজেদের সুযোগগুলি কম উপস্থাপন করে। তবে মাঝে মাঝে এরাও ফ্রিলান্স জব করে।


Freelancing এল কেমন করে?(ফ্রীলান্সিং এর ইতিহাস)



আধুনিক ফ্রীলান্সিং বলতে আমরা সাধারণত ইন্টারনেটে মুক্তপেশাকে বুঝলেও ফ্রিলান্সিং এর ধারণা আরো অনেক বিস্তৃত।  যে কোন ধরণের মুক্তপেশাকেই ফ্রীলান্সিং এর আওতায় ফেলার ফলে এর পরিধি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফ্রিলান্সিং এর ধারণা কিন্তু মোটেও আধুনিক কোন ধারনা নয়। ১৮-১৯ শতাব্দীতে ফ্রীলান্সিং এর ধারণা পাওয়া যায়। মনে করা হয় ১৮ শতাব্দীতে ফ্রীলান্সিং ধারনার উৎপত্তি। 'Freelance' শব্দটির প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় Sir Walter Scott এর ১৮১৯ সালে লেখা 'Ivanhoe' বইয়ে। যেখানে একজন লর্ড(রাজা বা আধিকারিক) তার সৈন্যদের উদ্দেশ্যে(বেতনভুক্ত সৈন্য) বলেন, 'I offered Richard the service of my Free Lances, and he refused them—I will lead them to Hull, seize on shipping, and embark for Flanders; thanks to the bustling times, a man of action will always find employment.'(বাংলা করি দিতে ফারতাম না, নিজেরা করি লন😉😉)। কিন্তু 'Freelance' শব্দটি ইংরেজি ভাষাতে আসে ১৮০০ সালের শুরুর দিকে তখন 'Freelance' দ্বারা বোঝানো হত একদল চিকিৎসক কাম সেবিকা/সেবকদের যারা যুদ্ধের ময়দানে যে পক্ষ বেশি টাকা দত তাদের সৈন্যদেরই চিকিৎসা/সেবা করত। P.G. Wodehouse ১৯৩০ সালে তার এক প্রবন্ধে একজন ফ্রিলান্সার লেখকের উল্লেখ করেন যিনি খুবই হাসিখুশি ফ্রীলান্সার জীবনযাপন করছিলেন।
১৯৬৯ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তলার উদ্দেশ্যে ARPANET(Advance Research Project Agency Network) নামক ইন্টারনেটের প্রাথমিক ভিত্তি তৈরী করে। ১৯৯০ সালে ARPANET বন্ধ হয়ে Internet নামে চালু হয় আধুনিক ইন্টারনেট। এর  আগেই অবশ্য ১৯৮৯ সাল থেকেই ISP এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্য ইন্টারনেট উন্মুক্ত হয়। ইন্টারনেট ইতিহাস বাদ থাক আমরা ফ্রীলান্সিং এ ফিরে আসি। আধুনিক ফ্রিলান্সিং এর ধারণা তৈরী হয় ১৯৭২ সালে। ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া এর অধ্যাপক Jack Nillies সর্বপ্রথম আধুনিক ফ্রিলান্সিং এর ধারনা বর্ণনা করেন। ৭০ এর দশকে ইন্টারনেট সাধারণের নাগালে না থাকায় ফ্রিলান্সিং এর ধারনা তখন খুব একতা বিকশিত হয় নি। ফ্রিলান্সিং মূলত জনপ্রিয় হয়ে উঠে ১৯৯৫ থেকে, ততদিনে ইন্টারনেট সাধারণের নাগালে চলে এসেছে ফলে এর পর থেকে ফ্রীলান্সিং এর জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকে। তবে ২০০১ এর পর আমেরিকার ফ্রিলান্সিং জোয়ারে একটু ভাটা পড়ে। অনেকে এর জন্য ৯/১১ কে দায়ী করেন। আবার ২০০৫ এর পর থেকে আমেরিকান ফ্রিলান্সারদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে এবং আশা করা যায় ২০২৫ এর মধ্যে আমেরিকার জনসংখ্যার ৫০% ই ফ্রিলান্সিং এর সাথে যুক্ত হবে।

আমেরিকার ফ্রিলান্সার আর সাধারণ চাকরিজিবিদের একটা গ্রাফ দেখলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।



আশা করা যায় সারা বিশ্বেই এই সময়ে ফ্রিলান্সারদের সংখ্যা বাড়বে। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৫ এর মধ্যে বিশ্বে ফ্রিলান্সারদের সংখ্যা এখনের তুলনায় দ্বিগুণ হবে।

আনন্দের বিষয় হল বাংলাদেশে ফ্রীলান্সিং জনপ্রিয় হচ্ছে। বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে আমদের ফ্রিলান্সাররা আর দক্ষ ও অভিজ্ঞ হয়ে উঠছে। আয় করছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে এ খাত থেকে আয় বাড়ছেই। ২০১৪-১৪ অর্থবছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়ে যায় ৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলার 😊😊😊। আর এটাকার পুরোটাই বৈদেশিক মুদ্রায়...

বাংলাদেশের এই খাতে রয়েছে অপরিসীম সম্ভাবনা। কারণ:

* বাংলাদেশ ১২ ঘন্টা টাইম জোনে অবস্থিত। অর্থাৎ আমেরিকা বা ইউরোপে যখন রাত আমাদের এখানে তখন দিন।  অর্থাৎ ইউরোপ আমেরিকার ক্লায়েন্টদের কাজগুলো আমরা দিনে করতে পারব, যখন তারা ঘুমাবে। আবার ইচ্ছা করলে ২৪ ঘন্টাই কাজ করা সম্ভব।

* আমাদের দেশে রয়েছে প্রচুর বেকার যুবক, যারা চাকরি পাবার জন্য হণ্যে হয়ে ঘুরাঘুরি করছে... এসব বেকার যুবকদের যথাযোগ্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে ফ্রীলান্সিং এ কর্মক্ষেত্র তৈরী করে দেওয়া সম্ভব।

* আমাদের দেশে শ্রমের মূল্য অনেক কম। কিন্তু আমাদের দেশে রয়েছে অনেক স্কিলড আর অভিজ্ঞ ফ্রিলান্সার, আবার নতুনদের ভালো প্রশিক্ষণ দিয়ে স্ক্লিওদ করে গড়ে তুললে ভালো কাজ পাওয়া সম্ভব। কেননা, ইউরোপ আমেরিকার কোন ফ্রীলান্সার কোন একটা কাজ যখন ৫০ ডলারের নিচে করে দিবে না আমাদের ফ্রিলান্সাররা সেটা ২০-২৫ ডলারের মধ্যেই করে দিবে।



ফ্রীলান্সিং কেন?



আসলে প্রশ্নটা হওয়া উচিত ছিল, ফ্রীলান্সিং কেন নয়??
ফ্রীলান্সিং এমন এক ক্ষেত্র যেখানে যে কোন বিষয়ে পারদর্ষী ব্যক্তিই কাজ করতে পারবে। কাজের ক্ষেত্র বিশাল। সারা পৃথিবী জুরে ফ্রীলান্সিং করার সুযোগ রয়েছে(নিজের ঘরে বসেই)। তারপরেও বলছি কেন ফ্রিলান্সিং; 

*ফ্রীলান্সিং হল মুক্ত পেশা। এখানে যে কেও তার পছন্দমত বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারে।

* কাজের জন্য কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই।

* কোন টাইম মত অফিস যাওয়া নেই। 

* নিজের মেধা বিকাশের পরিপূর্ণ সুযোগ রয়েছে, যেটা সাধারন চাকরিতে নেই। 

* ঘরে বসেই কাজ করা যায়।

* স্কিলড হলে সাধারন চাকুরির চেয়ে অনেক বেশি আয় করা যায়।

* পরিপূর্ণ স্বাধীনতা।



ফ্রীলান্সিং কিভাবে?






ফ্রীলান্সিং এর প্রথম কথাই হল একজন ফ্রিলান্সার কোন একজন ক্লায়েন্টের সাথে দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নন। ক্লায়েন্ট বা কর্মদাতা তার কাজটি করিয়ে নেওয়ার জন্য একজন ফ্রিলান্সারের সাথে সাময়িক একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন। সেই চুক্তির মেয়াদ থাকে কাজটি বুঝিয়ে দেবার আগে পর্যন্ত। এখন একজন এমপ্লয়ার বা ক্লায়েন্ট বা কর্মদাতা যখন তার কাজটি কোন ফ্রিলান্সারকে দিবেন তিনি অবশ্যই চাইবেন তার কাজটি দ্রুত হোক এবং যাকে দিয়ে কাজটি তিনি করাচ্ছেন তিনি যেন অভিজ্ঞ ও স্কিলড হন যাতে তার কাজটি সূক্ষ্ম ভাবে সম্পন্ন হয়।
অর্থাৎ কোন ফ্রীলান্সারের অবশ্যই দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হওয়া খুনই জরুরি। তা না হলে কাজ পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে। সবসময়ই সেরা ফ্রীলান্সার কাজটি পেয়ে থাকেন।

ফ্রীলান্সিং এ যে কোন বিষয় নিয়েই কাজ করা সম্ভব। কোন ব্যাক্তি যদি রান্নায় পারদর্শী হয় তবে সেও ফ্রিলান্সিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবে। সে রান্না বিষয়ক একটা সাইট খুলে বা ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে নতুন নতুন এবং ভালো মানের রান্নার রেসিপি দেওয়ার মাধ্যমে ভাল আয় করতে পারবে। মুল কথা হল দক্ষতা থাকতে হবে। দক্ষতা থাকলে ফ্রিলান্সিং এ সফলতা আসবেই। তাই আজই আপনি কোন একটি বিষয় নিয়ে সর্বোচ্চ ধারণা নিয়ে নিন আর শিখে নিন, হয়ে উঠুন দক্ষ।

আয় করার উপায়:



ফ্রীলান্সিং থেকে আয় করার  বেশ অনেকগুলো উপায় রয়েছে;

* লেখালেখি ও অনুবাদ করে আয়: ইন্টারনেট দুনিয়া থেকে আয় করতে পারেন লেখালেখি করে। বিভিন্ন প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ওয়েবসাইট কন্টেন্ট, রিভিউ, বিষয়ভিত্তিক পোস্ট, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি, ছোট গল্প, প্রাপ্তবয়স্কদের গল্প এবং এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় ভাষান্তরকরণ করে আয় করতে পারেন টাকা। বাঙালিদের জন্য সুখবর হল বিশ্বের প্রথম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ techtunes.com থেকেও এখন আর্টিক্যাল লিখে আয় করা সম্ভব। তাছাড়া আয় করতে পারেন, writing.com, onlinewritingjobs.com বা poewar.com থেকেও। 

* প্রোগ্রামিং: কোড লিখে সরাসরি আয় করতে পারে getacoderjob.com থেকে। এখানে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাজের জন্য কোডার বা প্রোগ্রামার খুঁজে থাকেন। আবার প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে এন্ড্রয়েড এপ বা সফটওয়্যার বানিয়ে আয় করতে পারেন। এখানে আবার দুইভাবে আয় করতে পারেন। নিজে এপ বা সফটওয়্যার বানিয়ে তা থেকে আয় করতে পারবেন আবার অন্য কারো জন্য এপ বা সফটওয়্যার বানিয়ে দিয়েও আয় করতে পারবেন।

* ওয়েব ডেভেলাপিং এবং ওয়েব ডিজাইনিং: ওয়েব ডেভেলাপিং এবং ডিজাইনিং এর মাধ্যমে দুইভাবে আয় করা যায়। নিজের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখান থেকে আয় অথবা অন্য কার জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে দেওয়া এবং ডিজাইন করে দেওয়া।

* গ্রাফিক্স ডিজাইনিং: গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এ ভালো দক্ষতা থাকলে আপনি বেশ কয়েকভাবেই এ থেকে আয় করতে পারবেন। অন্যের জন্য ডিজাইন করে দিয়ে আপনি আয় করতে পারবেন। বিভিন্ন মাইক্রোস্টক সাইট থেকে আয় করতে পারবেন, এ সাইতগুলো থেকে আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার দেওয়া কোন একটি আইকন, লোগো, চরিত্র(কার্টুন), টেমপ্লেট বা ব্যাকগ্রাউন্ড এ ধরণের সাইটে আপলোড করার পর এটি ক্রমাগত বিক্রি হতে থাকবে আর আপনি লভ্যাংশ পেতে থাকবেন। এমন কিছু সাইট; shutterstock.com, fotolia.com, istockphoto.com, dreamstime.com । আনার বিভিন্ন কনটেস্টে অংশ নিয়েও আয় করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর উপরেই হবে কনটেস্ট। এমন কিছু সাইট: 99designs.com, logotournament.com, designbyhuman.com ।

* ইন্টারনেট মার্কেটিং: ইন্টারনেট মার্কেটিং এর সবচেয়ে বর প্লাটফর্ম হল Youtube । Youtube এ বিভিন্ন ভিডিও আপলোডের করে তাতে এড শো করিয়ে টাকা আয় করা সম্ভব। বর্তমানে এটা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং পেইড প্রোমশনের মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। Youtube এ আমার চ্যানেল

গ্রাহক সেবা: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহককে টেলিফোন, ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহাজ্যে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা।

প্রশাসনিক সহায়তা: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কাজের ডাটা এন্ট্রি করণ, ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা।

* PTC সাইট থেকে আয়: অনেকের মতে পিটিসি সম্পূর্ণই ভুয়া। কথাটা পুরোপুরি ঠিক না। কিছু কিছু পিটিসি সাইত সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এ নিয়ে আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।

* এনভাটো মার্কেটপ্লেস থেকে আয়: এ ধরণের ডীজিটাল মার্কেটপ্লেস বিভিন্ন ধরণের কেনাবেচার সুবিধা দেয়। যেমন গাফিক ও্যার্ক, টেমপ্লেট, মকিউজিক, ভিডিও, ফটোগ্রাফি ইত্যাদি। এমন কিছু সাইট: themeforest.net, graphicriver.com, 3docean.net, photodune.net ইত্যাদি। 

* প্লাগইন তৈরী: Wordpress শিখে নতুন নতুন প্লাগইন তৈরী করে তা থেকে প্রচুর আয় করা সম্ভব।




                                     আপনার ফ্রীলান্সিং জীবন সুন্দর হোক!